Monday, 2 October 2017

সায়েন্স ফিকশনঃ রহস্যভেদ

প্রতিদিনের মতো ট্রেনিং এ যাবার জন্য রবো শিপ থেকে বের হলো গ্রে বট। সে এখন লেভেল থি ক্যাটাগরির রোবট। তার মতো আরো হাজার খানেক রবোট রয়েছে লেভেল থ্রি ক্যাটাগরির। রোবটদেরকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে দিয়েছে পৃথিবীর মানুষ। কাজের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে এসব ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম ক্যাটাগরির রবোটরা হলো সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন। এদের দিয়ে গবেষণা,প্রতিরক্ষার এবং নানান ধরনের ঝুকিপুর্ণ পরীক্ষার প্রধান কাজগুলো করানো হয়।
এই তো বেশকিছু দিন আগে প্রোহান্টকে  নিউ-ট্রি তে পাঠানো হয়। নিউ ট্রি হলো নতুন আবিষ্কৃত একটি গ্রহ। মানুষের ধারণা এখানে  অন্য কোন প্রাণিদের অস্তিত্ব রয়েছে। গ্রহটির অবস্থান সূর্যের খুব কাছাকাছি। প্রোহান্ট সে যাত্রায় বেশকিছু গুরুত্বপুর্ণ এবং চাঞ্চল্যকর তথ্য নিয়ে এসেছে।
প্রোহান্ট এর অবস্থান বরাবর নাকি আলোর বেগে একধরণের আলোক রশ্নি ছোটে আসে।মাত্র ০.০১ মিলিসেকন্ড সময়ের ব্যবধানে নিজেকে সরিয়ে নেয় প্রোহান্ট। তারজায়গায় লেভেল সিক্স এর কোন রোবট থাকলে এতদ্রুত আত্নরক্ষা করতে পারতো না। হয় তো মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ঠিক কি কারণে এই রশ্নি এসেছে তা এখনো জানা যায় নি। তবে মনেকরা হচ্ছে নিউ ট্রি গ্রহের চারপাশে রয়েছে অদৃশ্য সয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। বেশকিছু আলামত থেকে এই সিধান্তে উপনীত হয়েছে মহাকাশ গবেষণার কাজে নিয়োজিত লেভেল ওয়ান ক্যাটাগরির রোবটরা। তবে, এ আলামতগুলো সম্পর্কে জানতে পারে নি গ্রে বট। তার কারণ হচ্ছে নিরাপত্তার সার্থে সবার কাছে আলামতগুলো প্রকাশ করা হয় নি।


গ্রে বট এর খুব ইচ্ছা করে সে লেভেলে ওয়ান ক্যাটাগরির রোবট হবে। নিউ ট্রি গ্রহের রহস্য ভেদ করবে সে। তারজন্য সে নিয়িমিত গুরুত্ব দিয়ে ট্রেনিং করছে। তথ্য ভান্ডার থেকে সে জেনেছে আগেকার দিনের রোবটরা নিজেদের ইন্টেলিজেন্স বাড়াতে পারতো না। তাকে যেভাবে তৈরী করা হয়েছে সেভাবেই কাজ করতো। কিন্তু আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এর অনেক উন্নতি হয়েছে। এখন রোবটদের এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন নিজেই তার সীমাব্ধতা বোঝতে পারে এবং তা কাটিয়ে উঠতে পারে।
একটা বিশেষ মিটার যুক্তকরে দেওয়া হয় সবগুলা রোবটের সাথে। এতে  ইন্টেলিজেন্সের উপর ভিত্তি করে ক্যাটাগরি আপডেট হয়। এই তো গ্রেবটকে তৈরি করা হয়েছিল শুধুমাত্র ছোট খাটো কাজ করানোর জন্য। তখন সে লেভেল ফোর ক্যাটগরিতে ছিল। তার আগের এরর গুলো সে নিজে ফিক্স করে ফেলে। তারপর নিয়মিত ট্রেনিং এ যায়, ট্রেনিং এর বিষয় এনালাইজড করে তার নিজের মধ্যে প্রয়োগ ঘটায়। এভাবে তার ক্যাটাগরি এখন লেভেল থ্রি তে। হয় তো আরো কিছুদিন পর লেভেল টু তারপর লেভেল ওয়ান এ পৌছে যাবে। তারপর ভেদ করবে নিউ ট্রি গ্রহের রহস্য।  

সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত। রোবোটরা একে অপরের সাথে কথা বলাতে পারে  তার জন্য রয়েছে রবোটিক কমিউনিকেশন সিস্টেম। তবে প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা কথা বলে না এরা। গ্রে বট ভাবতে থাকে নিউ ট্রি গ্রহের কথা , আসলে কি এমন আলামত পাওয়া গেছে যে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। কিন্তু ভাবনার কোন সীমানায় সে পৌছাতে পারছে না। কারণ রোবটদের ইন্টিলিজেন্স এর প্রসার বাড়ে আগের এরর ফিক্সড করার মাধ্যমে। আগের ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা যা মেমরিতে সেভ থাকে তার বিশ্লেষন করে সমাধান করে। গ্রে বট এর মহাকাশ  এর ব্যপারে  এ ধরণের কোন অভিজ্ঞতা এ পর্যন্ত হয় নি, তাই সে ভাবনার সীমায় পৌছাতে পারে না।

 আচমকা একটা শব্দ হলো। অনেকটা ওয়ার্নিং মেসেজ এ যেরকম শব্দ হয়।  আরে এ তো হিক্যাপ।
আকাশের দিকে থাকিয়ে আছে। হ্যা, উপরে কিছু একটা উড়ছে, আর সেই শব্দ টা এর থেকেই আসছে। হিক্যাপ লেভেল টু এর রোবট। গ্রে বট হিক্যাপ কে জিজ্ঞেস করার আগেই হিক্যাপ রিড করে নিলো গ্রেবট এর প্রশ্ন। হিক্যাপ বলতে লাগলো - হ্যালী হচ্ছে একধনের যন্ত্র যেটা কোন চালক ছাড়াই উড়ে। প্রচন্ড রকম আর্টিফিশিয়ার ইন্টেলিজেন্স দেওয়া হয়েছে একে। কোন জায়গায় কত কোণে উড়তে  হবে, কত উপরে উড়তে হবে সব বোঝেও । তবে এখন এর থেকে ওয়ারনিং ম্যাসেজ আসছে। মনে হয় সিস্টেম ঠিক মতো কাজ করছে না। এটি তৈরির সময় নিজে কাজ করেছে হিক্যাপ।
তাই সে রিড করতে চেস্টা করলো সমস্যা কোথায়। না ! সে তো কোন সমস্যা আন্দাজ করতে পারছে না।  এবার একটি স্পস্ট ম্যসেজ আসলো হ্যালী নামক যন্ত্র থেকে "লেজার এর বিকিরণ হচ্ছে উপর থেকে" ভাবতে থাকে গ্রে বট তাহলে কি এই একই আলোক রশ্নি  প্রোহান্ট কে আক্রমণ করেছিল? রহস্যভেদ করতে চায় গ্রে বট।

চলবে............ 

0 comments:

Post a Comment